বিনোদন ডেস্ক: সিনেমার মন্দাদশা কাটাতে দীর্ঘদিন ধরেই কথা হচ্ছিল ভারতীয় ছবি আমদানির। করোনার কারণে মাঝে আমদানি-রফতানি সব বন্ধ ছিল। অবস্থা কিছুটা উন্নতি হওয়ায় সাফটা চুক্তির আওতায় ঢাকায় আসে ওপার বাংলার তারকা অভিনেতা জিতের ‘বাজি’। এবার পূজাতে সেখানে মুক্তির পর পর বাংলাদেশে মধুমিতাসহ ৪৩ হলে মুক্তি পায় ছবিটি। তবে জিৎ ‘বাজি’তে জিততে পারেন নি, বরং খুবই বাজেভাবে দর্শক ছবিটিকে প্রত্যাখ্যান করেছে- বিভিন্ন প্রেক্ষাগৃহ ঘুরে এমনটাই জানা গেছে। আর এটা থেকে প্রমাণ হলো দেশীয় ছবির বাজার চাঙা করতে ভারতীয় ছবি নয় বরং যৌথ প্রযোজনাকে উদ্বুদ্ধ করার- মত বোদ্ধাদের।
এ ব্যাপারে দেশের একাধিক সিনেমা হল কর্তৃপক্ষ ব্যর্থতার কথা স্বীকার করে বলেন- ‘বাজি’ দর্শক চাহিদা পূরণে ব্যর্থ হয়েছে। আর এ ব্যর্থতার অন্যতম কারণ পর্যাপ্ত প্রচারনার অভাব। তাদের বক্তব্য আজকাল কোনো ছবিতেই যথেষ্ট পরিমান প্রচারণা করা হয় না বলে দর্শক জানতেই পারে না কবে কোন হলে কখন ছবি চলবে। এর পাশাপাশি তারা ধর্মীয় বিশৃংখলাকেও তারা দায়ী করেছেন।
প্রথম দিন টেনেটুনে খরচ উঠলেও দ্বিতীয় এবং তৃতীয় দিনে সব প্রেক্ষাগৃহেই মুখ থুবড়ে পড়ে সিনেমাটি সরেজমিনে গিয়ে এমন দৃশ্যই চোখে পড়ে এই প্রতিবেদকের।
জয়দেবপুরের বর্ষা সিনেমা হলে শেয়ারিংয়ে চলছে ছবিটি এমনটাই জানালেন সার্বিক দায়িত্বে থাকা আবদুর রহমান। ‘খরচ বাদ দিয়ে যা লাভ হবে তা সমান ভাগে দুই পক্ষ পাবে। শুক্রবার তিন শো থেকে ২৭ হাজার টাকা সেল হয়েছে ‘বাজি’র। শনিবার হয়েছে ১৫ হাজার টাকা। রবিবার ৫ হাজার টাকা সেল হয়েছে’- যোগ করেন তিনি।
অপরদিকে দীর্ঘ দেড় বছর পর ‘বাজি’ দিয়ে খুলেছে রাজধানীর ঐতিহ্যবাহী মধুমিতা সিনেমা হল। তবে এখানে ‘বাজি’র অবস্থা আরো খারাপ। শুক্রবার ২৫ হাজার টাকা সেল, শনিবার ৭ হাজার, রবিবারও তাই। এ ব্যাপারে প্রেক্ষাগৃহের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইফতেখার উদ্দিন নওশাদ আজকালের খবরকে বলেন, ছবিটি ঘিরে আশা করেছিলাম। কিন্তু ব্যর্থ।’ তবে ছবি চালাতে প্রচারণার বিকল্প নেই বলেও তিনি অভিমত ব্যক্ত করেন।
এদিকে ‘শ্যামলী’ সিনেপ্লেক্সেও ব্যবস্থাপক আহসানউল্লাহ বলেন, জিতের এই সিনেমার দর্শক একেবারে নেই বলা যায়। চালাতে হয় বলে চালাচ্ছি। বিদুৎ বিল, স্টাফদের খরচ পর্যন্ত উঠছে না। একেবারেই লস প্রজেক্ট। এখন দরকার দেশীয় বিগ বাজেটের ছবি মুক্তি দেয়া। পাশাপাশি তিনি যৌথ প্রযোজনার ছবির ওপরও জোর দেন।
হলে দর্শক না আসার কারণ হিসেবে ধর্মীয় অস্থিরতাকে দায়ী করলেন বগুড়ার সর্বাধুনিক মধুবন সিনেপ্লেক্স এর পরিচালক ইউনুস রুবেল। এই হল মালিক নেতা আজকালের খবরকে বলেন- নতুন থিয়েটার হিসেবে মোটামুটি ব্যবসা হচ্ছে ‘বাজি’র। শনিবার, রবিবারও তাই। তবে তিনি অপর্যাপ্ত প্রচারণাকেও দায়ী করছেন। বলেন, ছবিটি যে প্রতিষ্ঠান এনেছেন, তাদের উচিৎ ছিলো ব্যাপকভাবে প্রচার করা। করলে সারা দেশে এই চিত্র হতো বলে তার দাবি।
তার এমন কথার জবাবে আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান তিতাশ কথাচিত্রের কালাম আজকালের খবরকে বলেন, আমরা মেন করেছিলাম নতুন ছবি তাই ওইভাবে মার্কেটিংয়ে যাইনি। তবে তিনি দাবি করেন – যেভাবে বলা হচ্ছে ছবিটি ব্যর্থ আসলে তা নয়। আমি এনেছি তাহলে লসের কথাতো আমার বলার কথা। ধর্মীয় অস্থিরতা না থাকলে এ ছবি চালাতে প্রচার লাগতো না, এমনিতেই চলতো বলে তিনি -যোগ করেন।
‘বাজি’ ছবিতে জিতের নায়িকা মিমি চক্রবর্তী। এই সিনেমার বিনিময়ে বাংলাদেশ থেকে পশ্চিমঙ্গে দেয়া হয়েছে ‘রাত্রির যাত্রী’।
Leave a Reply